দেশে এইডসে আক্রান্ত শনাক্তের রেকর্ড

দেশে এইডসে আক্রান্ত শনাক্তের রেকর্ড, aids


বাংলাদেশে প্রতিবছরের মতো এবারও এইডস রুগী শনাক্ত করা হয়েছে। এই বছর মোট এইডসে আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন। অন্য বছরের তুলনায় এবার এইডস রুগী আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। বাংলাদেশে মোট এইডস রুগীর সংখ্যা ১১ হাজার। ২০২০ সালে এইডস রুগীর সংখ্যা ছিল ৯৪৭ জন। বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে ও এইডস রুগীর সংখ্যা দিনদিন ছড়িয়ে পড়ছে। তবে প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকায় এইডস রুগীর সংখ্যা বেশি।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এইডসে আক্রান্ত রুগী ১ হাজার ১০০ জন। এইচআইভি তথ্য মতে দেশে আনুমানিক প্রায় ১৫০০০ এইডস্ রুগী আছে। এই সব রুগী অধিকাংশ শনাক্তের বাহিরে। শনাক্তের দিক থেকে ঢাকার পরেই রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি এইডস রুগী। এর পরে চট্টগ্রাম তারপর সিরাজগঞ্জে এইডস্ রুগী শনাক্ত করা হয়েছে। এইডস্ রুগীর অধিকাংশই মাদকাসক্ত।


এইডস বিশেষজ্ঞরা বলেন, শনাক্ত হওয়া অধিকাংশ রুগী চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু বরন করছে। এই সব রুগী চিকিৎসা না পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে এইডসের ঝুঁকি বাড়ছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসার পরিধি বাড়াতে হবে। আজ শুক্রবার ১লা ডিসেম্বর সারাবিশ্ব ব্যাপী পালিত হচ্ছে এইডস দিবস। সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে এইডস দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য " কমিউনিটির আমন্ত্রণ এইডস হবে নিয়ন্ত্রণ "। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি আয়োজন করেছে।


বিশ্বে সবচেয়ে বেশি এইডস্ রুগীর সংখ্যা বেশি দক্ষিণ আফ্রিকায়। আফ্রিকায় এইডস্ রুগী আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি আর প্রতিবছর ৪৫ হাজারের বেশি শিশু মাতৃগর্ভেই এইচআইভি আক্রান্ত হচ্ছে। আফ্রিকার পরে এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ভারতে। ভারতেও এইডসে আক্রান্ত রুগীর সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, দারিদ্র এবং লিঙ্গ এইডস্ আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। শিশুদের উপর এইডসের প্রভাব অনেক বেশি। আজ বিশ্ব এইডস্ দিবসে জাতিসংঘ বলেছেন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বড়ো ধরনের প্রচেষ্টা প্রয়োজন।


দেশে অধিকাংশ এইডস্ রুগী শনাক্তে হয় যারা বিদেশ থেকে আসে তাদের মাধ্যমে। বিমানবন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্তা না থাকর জন্য এইডসে আক্রান্ত রুগী দেশে প্রবেশ করছে। আমাদের দেশে এইডস্ এর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও একমাত্র চিকিৎসা দেওয়া হয় রাজধানীর সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে। এই হাসপাতালে জ্বর, মাথাব্যাথা ফুসফুস বা গলা ব্যথা ও অন্যান্য জটিল রোগ নিয়ে ভর্তি হয় যায় ১০ শতাংশ ব্যক্তি এইডসে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বলেছেন, নতুন শনাক্তের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হচ্ছে অভিবাসী। এই সব অভিবাসীর অধিকাংশ মধ্যেপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসছে। আক্রান্ত হয়ে দেশে আসার পর তাদের বিমানবন্দরে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


দেশে এইডস রুগীদের চিকিৎসার ব্যবস্তা সরকার বিনামূল্যে দিয়ে থাকেন। এইডসে আক্রান্ত প্রায় ১২ শতাংশ যক্ষ্মা রুগী। এদের মধ্যে ৬ শতাংশ রোহিঙ্গা বাকি শনাক্ত হয় অন্যান্যদের মধ্যে থেকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঠিক মতো চিকিৎসা দিলে ৯৮ শতাংশ মা সুস্থ মা সুস্থ সন্তান জন্মদিতে পারবে। অনেক সময় এইডস রুগীদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে সরকারি বেসরকারি হসপিটাল গুলোতে চিকিৎসা দিতে চাই না। ফলে রুগীদের অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে যায়।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন