১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করুন। ৫টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। এখনি শুরু করুন এই ব্যাবসা।

পর্যাপ্ত টাকা থাকলে অনেক ধরনের ব্যবসা করা যায়। আর ১০ লক্ষ টাকা তো অনেক বড় এমাউন্ট। একটি মুদির দোকান ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে সুন্দরভাবে করা যেতে পারে। বর্তমান মুদির দোকানে তেমন বেশি লাভ না হয় মানুষ অন্য ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে। তবে যাইহোক এখানে 10 লক্ষ টাকার মধ্যে সবচেয়ে ভালো পাঁচটি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা অত্যন্ত লাভজনক এবং ভালো ব্যবসা। আজকে যে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করব তা মূলত স্টক ব্যবসার আওতাভুক্ত। 

১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করুন। ৫টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। এখনি শুরু করুন এই ব্যাবসা।

এই ব্যবসার মূল অংশ হলো প্রথমে পণ্য কিনে স্টক করতে হবে পরে বাজারে চাহিদা দ্বিগুণ হলে তা বিক্রি করতে হবে। বাজারে এমন অনেক পণ্য আছে যা স্টক করে ব্যবসা করা যেতে পারে। স্টক ব্যবসা করে আপনি ভালো টাকা লাভ করতে পারেন। তাছাড়া স্টক ব্যবসায় লস এর সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। এখানে আমি যে স্টক ব্যবসার কথা উল্লেখ করব তা মূলত গ্রাম অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে ভাল। আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যবসার উদ্যোগ হতে পারে এই ব্যবসা পাঁচটি। নিচে পাঁচটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া উল্লেখ করা হলো। যা গ্রাম থেকে সংগ্রহ করে শহরে বিক্রি করা যেতে পারে এবং প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে।


পাঁচটি লাভজনক ব্যবসার নাম কি?


এখানে পাঁচটি লাভজনক ব্যবসার নাম রয়েছে। আপনি এই পাঁচটি ব্যবসা স্টক করে ভালো পরিমানের টাকা ইনকাম করতে পারেন। বাজারে এই ব্যবসা গুলির চাহিদা অনেক। তাছাড়া এই পণ্যগুলো সব সময় মানুষের চাহিদা পূরণ করে। দরকারি পণ্য হওয়ায় এই পণ্যগুলো কিনে রাখলে কখনো লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নিচে ব্যবসা করার জন্য পাঁচটি পণ্যের নাম দেওয়া হল


১) ধানের ব্যবসা।

২) আলুর ব্যবসা।

৩) সরিষার ব্যবসা।

৪) ভুট্টার ব্যবসা এবং

৫) গমের ব্যবসা।


উপরের এই পাঁচটি পণ্য দিয়ে ব্যবসা করতে চাইলে আপনি ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। চাইলে পাঁচটির মধ্যে যেকোনো একটি ব্যবসাকে বেছে নিতে পারেন অথবা চাইলে পাঁচটি ব্যবসা একাধারে করতে পারেন। এটি ডিপেন্ড করে সম্পূর্ণ আপনার উপরে। তাছাড়া এই পাঁচটি ব্যবসা একসঙ্গে করা যেতে পারে কোন সমস্যার সম্মুখীন হবেন না।


১০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিভাবে ধানের ব্যবসা করবেন?


ধানের ব্যবসা মূলত সিজনালী ব্যবসা। বছরে কৃষি জমি থেকে দুই মৌসুমে ধান পাওয়া যায় ইরি ধান এবং আমন ধান। আপনি যদি সিজনালীর সময়ে ধান কিনে গুদামে রাখতে পারেন তবে কিছুদিন পর তা বিক্রি করলে কিনা দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা সম্ভব। যদি ১০ লক্ষ টাকার ধান কিনে স্টক করেন দুই মাস পরে তা বিক্রি করলে আনুমানিক দেড় লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকা প্রফিট করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন হবে আপনার একটি গুদামঘর। অর্থাৎ যেখানে ধান সংরক্ষণ করে রাখবেন। আপনার একটি গুদামঘর থাকলেই এই ব্যবসাটি আপনি অনায়াসে করতে পারেন।


এছাড়াও আপনি চাইলে ধান কিনে চাল তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। এতে প্রফিটের পরিমাণ আরো বেশি হবে। কারণ আপনি যখন ধান থেকে চাল বের করবেন তখন ধানের খোসা গুলো গুড়া অথবা চুষে পরিণত হবে। যা বিভিন্ন গবাধি পশু বা হাঁস মুরগি মাছের খাবার হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়। ১০ লক্ষ টাকার ধান থেকে আনুমানিক ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকার গুড়া বিক্রি করা সম্ভব।


১০ লক্ষ টাকা দিয়ে আলুর ব্যবসা কিভাবে করবেন?


আমন ধান কিনার দুই থেকে আড়াই মাস পরেই কৃষি জমিতে আলু পাওয়া যায়। মানে আমন ধান কাটার পরেই আলু চাষাবাদ শুরু হয়। আর আলু হতে সময় লাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই মাস। এর মধ্যে আপনি ধান বিক্রি করে পুনরায় সেই টাকা দিয়ে আলু কিনতে পারেন। গ্রাম অঞ্চলে আলুর সিজনে আলুর দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কম থাকে। আলুর সিজনে কেজি প্রতি আলুর দাম প্রায় 8 থেকে 10 টাকা হয়ে থাকে। আলুর মৌসুমে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে এক মন আলু কিনা যায়। অর্থাৎ ৪০ কেজি আলু কিনতে প্রায় খরচ হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এক বস্তা আলু কিনতে খরচ পড়ে 800 থেকে হাজার টাকা। আর এক বস্তায় আলুর পরিমান প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ কেজি হয়ে থাকে।


আপনি যদি ১০ লক্ষ টাকার আলু কিনে হিমঘরে রাখতে পারেন তবে দুই থেকে তিন মাস পর কেজি প্রতি ৮ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত প্রফিট করা সম্ভব। অর্থাৎ ১০ লক্ষ টাকার আলু কিনলে তিন থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনি আপনার সব খরচ খরচা বাদ দিয়ে এত টাকা প্রফিট রাখতে পারবেন। এখন যাওয়া যাক সরিষার ব্যবসায়।


১০ লক্ষ টাকা দিয়ে সরিষার ব্যবসা কিভাবে করবেন?


সরিষা এবং আলু মূলত একই সময় আসে হয়তো দুই একদিন কমবেশি হতে পারে। সরিষার মৌসুমে সরিষার দাম মন প্রতি ১৪০০ থেকে ২০০০ মধ্যে হয়ে থাকে। সরিষার দাম মূলত সরিষার প্রকারভেদ এর উপর নির্ভর করে। যাইহোক আপনি যদি একই সময়ে আলুর সাথে সাথে সরিষাও কিনে রাখতে চান তবে রাখতে পারেন। দুই থেকে তিন মাস পরে বিক্রি করলে মন প্রতি ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। 


চাইলে সরিষা থেকে তেল তৈরি করে তেল বাজারে বিক্রি করা যেতে পারে। সরিষা থেকে তেল বের করার পর অবশিষ্ট সরিষার খোল বাজারে মুদির দোকানে বিক্রি করা যেতে পারে। খোল বিক্রি করে অতিরিক্ত ৮০ থেকে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। খোলের চাহিদা বাজারে অনেক রয়েছে কারণ খোল দিয়ে মাছ চাষ করা যায়। গবাদিপশুর খাবার হিসেবে খোল ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও জমির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য কৃষকেরা কৃষি জমিতে খোল প্রয়োগ করে থাকে। ১০ লক্ষ টাকার সরিষা কিনে দুই থেকে তিন মাস পরে বিক্রি করলে আনুমানিক তিন লক্ষ টাকায় ইনকাম করা সম্ভব।


১০ লক্ষ টাকা দিয়ে গমের ব্যবসা কিভাবে করবেন?


গম মূলত আলু সরিষার ১ থেকে দেড় মাস পরেই গম পাওয়া যায়। ১০ লক্ষ টাকার গম কিনে রাখলে আনুমানিক দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আর গম থেকে আটা তৈরি করে গমের আটা বিক্রি করে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। গমের আটার চাহিদা বাজারে অনেক রয়েছে। তাছাড়া গ্রাম অঞ্চলে ময়দার আটা থেকে বেশি গমের আটার রুটি খাওয়া হয়। এছাড়া অনেকেই গ্রামে গরুকে গমের আটা খাইয়ে থাকে এতে গরু তাড়াতাড়ি মোটাতাজা হয। দুধের গাভীকেও খাওয়ানো হয় অতিরিক্ত দুধের জন্য। যাইহোক বাজারে  চাহিদা যেমন রয়েছে তেমনি লাভের পরিমাণও রয়েছে এই গমের ব্যবসাতে।


১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ভুট্টার ব্যবসা কিভাবে করবেন?


যদি ১০ লক্ষ টাকা থাকে তবে আপনি মৌসুমী সময়ে ভুট্টা কিনে স্টক করে রাখতে পারেন। ভুট্টার ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। গ্রাম অঞ্চলে ভুট্টা ব্যবসায়ীর সংখ্যা অনেক কম। ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম বলে অনেক ভুট্টা মালিকরা তুলনার চেয়ে অনেক কম দামে ভুট্টা বিক্রি করে থাকেন। এই সময় যদি ১০ লক্ষ টাকার ভুট্টা কিনে দুই তিন মাস পর বিক্রি করা যায় তবে আনুমানিক চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। 


বর্তমান ভুট্টার চাহিদা বাজারে অনেক। হাঁস মুরগি থেকে শুরু করে পুকুর ও গবাদি পশু পর্যন্ত সব জায়গায় ভুট্টার খাবার ব্যবহার করা হয়। 


উপরে বর্ণিত সবগুলো ব্যবসায় একটি লাভজনক ব্যবসা। যা সিজনালি সময়ে স্টক করে দুই তিন মাস পরে বিক্রি করলেই প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ অথবা চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রফিট অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া এই ব্যবসাগুলিতে লসের পরিমাণ সীমিত। আপনার যদি ১০ লক্ষ টাকা থাকে তবে আপনি এই ব্যবসা গুলো করার চিন্তাভাবনা করতে পারেন যা অত্যন্ত আরামদায়ক এবং প্রফিটেবল ব্যবসা হিসেবে পরিচিত।


ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সব সময় নতুন চিন্তা ভাবনা করার প্রবণতা তৈরি করবেন। এতে আপনার লাভের পরিমাণ এবং ব্যবসা ধরন অনেকটাই পাল্টে যাবে। ব্যবসা কঠিন আবার সহজ তাই ব্যবসা করার ক্ষেত্রে মনোযোগ সহকারে চিন্তা ভাবনা করে ব্যবসা করার  সিদ্ধান্ত নিন। ব্যবসায় যেমন লাভ রয়েছে তেমনি করে কোন ভুল করলে লস ও রয়েছে। তাই ব্যবসা করার সময় বুঝেশুনে সতর্কভাবে ব্যবসা করা দরকার।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন