ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো? চলুন জেনে নিই। Which facewash is good for acne?

ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো?

ব্রণের সমস্যায় নিজের ত্বকের বেহাল দশা দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া অনেকেই জানতে চান ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো। অনেকেই আবার রিসার্চ না করে এবং সাইড এফেক্ট সম্পর্কে না জেনেই লো কোয়ালিটির ফেসওয়াস কিনে তা ব্যবহার করেন৷ 


ফলে ব্রণের সমস্যা তো দূর হয়ই না! বরং ত্বকের অন্যান্য সমস্যা আরো বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় আজকের এই আর্টিকেল হতে চলুন জেনে নিই ব্রণের জন্য ঠিক কোন কোন ফেসওয়াস ভালো হবে! 


প্যানক্সিল ব্রণ ফোমিং ফেসওয়াশ

পরিষ্কার, দাগ-মুক্ত ত্বকের জন্য সাধারণত এই প্যানক্সিল ব্রণ ফোমিং ফেসওয়াশটি ব্যবহার করা হয়। মূলত এই ফেসওয়াশটিতে বেনজয়াইল পারক্সাইড নামক উপাদান ১০% পরিমাণে যোগ করা হয়েছে। যার কারণে এটি ত্বকের যত্ন নিতে শতভাগ ভুমিকা পালন করতে সক্ষম হয়। 


তাছাড়া ফেসওয়াশটিতে থাকা এই শক্তিশালী উপাদানটি ব্রণ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে দ্রুত মেরে ফেলতে পারে। সেই সাথে এর ব্রণের কারণে ত্বকে দেখা দেওয়া দাগগুলিকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করার বিষয়টি তো আছেই! 


চলুন জেনে নিই এই এক প্যানক্সিল ব্রণ ফোমিং ফেসওয়াশ ব্যবহারে আপনি কি কি সুবিধা ফ্রিতেই পাবেন: 


  • এই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ফোমিং ওয়াশ আপনার ত্বকের দাগ ম্যাজিকের মতো করে দূর করে দেবে

  • এই ফেসওয়াশটি আপনার ত্বকের ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে দ্রুত মেরে ফেলবে 

  • ব্রণের কারণে ত্বকে থাকা ছিদ্রের গভীর থেকে ময়লা অপসারণ করবে

  • ত্বকের ময়লা এবং অতিরিক্ত তেল দূরীকরণেও এর জুড়ি মেলা ভার

  • এই ফেসওয়াশটি ত্বকের ব্রেকআউট প্রতিরোধ করতে

  • এটি আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর ত্বকের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে 


নিউট্রোজেনা অয়েল ফ্রি স্যালিসিলিক অ্যাসিড একনি ফাইটিং ফেসওয়াশ

স্যালিসিলিক-অ্যাসিড-ভিত্তিক এই ফেসওয়াশটিকে আপনি চাইলে ব্রণের মেডিসিনও বলতে পারেন। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রায়ই এই ফেসওয়াশটিকে সাজেস্ট করা হয়। 


বলে রাখা ভালো এটিতে মাত্র ২ শতাংশের স্যালিসিলিক অ্যাসিড যোগ করা থাকে। যার কারণে সেনসিটিভ ত্বকের ক্ষেত্রে এটি খুব একটা খারাপ এফেক্ট ফেলবে না। 


আর ফেসওয়াশটিকে ২০ বছরের উপরে থাকা ইউজারদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া যারা ব্রণের কারণে ত্বকে গুরুতর ব্রেকআউটের চিকিৎসা করতে চান তাদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকরী ভুমিকা রাখবে এই নিউট্রোজেনা অয়েল ফ্রি একনি ফেসওয়াশটি। 


নিউট্রোজেনা অয়েল ফ্রি একনি ফেসওয়াশের কার্যকারিতা হিসাবে এটি ব্যবহারে আপনি যেসব সুবিধা পাবেন সেসব সুবিধাগুলি হলো: 


  • আপনার মৃত ত্বকের কোষের ম্যাট্রিক্সকে ভেঙে দিতে সাহায্য করবে

  • মৃত কোষের কারণে ফেইসে দেখা দেওয়া ছিদ্রগুলিকে প্লাগ করতে কাজ করবে

  • এটির সিল্কি জেল টেক্সচারটি ত্বকে প্রয়োগ করার সময় ত্বকে একটি সুন্দর গ্লো দেবে


মিনিমালিস্ট স্যালিসিলিক অ্যাসিড ফেসওয়াশ

শুরুতেই বলবো ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো রিলেটেড আজকের আর্টিকেলের এই অংশে যে ফেসওয়াশটিকে নিয়ে কথা বলবো সেটিতে মাত্র ২% স্যালিসিলিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে এসিডটি যেমন আপনার ত্বকের ব্রণ দূর করতে কাজ করবে! 


ঠিক তেমনই এর অল্প পরিমাণ অংশ ব্যবহারে আপনার ত্বকে কোনোধরণের সাইড এফেক্টও ফেলবে না। বর্তমানে মিনিমালিস্ট স্যালিসিলিক অ্যাসিড ফেসওয়াশের যে প্যাকটি আপনি বাজারে পাবেন সেই প্যাকটিতে আপনি ১০০ মিলিগ্রামের মতো ফেসওয়াশ পাবেন। 


তাছাড়া বাজেট ফ্রেন্ডলি ব্রণ রিমুভার ফেসওয়াশ হিসাবে এই মিনিমালিস্ট স্যালিসিলিক অ্যাসিড ফেসওয়াশটি বেশ কাজেরই বলা চলে! ফ্রেন্ডলি বাজেটের পাশাপাশি এই বিশেষ ফেসওয়াশটি ব্যবহারে আপনি যেসব সুবিধা পাবেন সেসব সুবিধাগুলি হলো: 


  • ফেসওয়াশটিতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল জিঙ্ক এবং স্যালিসিলিক অ্যাসিড ব্রণকে গভীরভাবে দূর করে

  • ত্বকে একটি পরিষ্কারভাব তৈরি করে এই ফেসওয়াশ

  • মিনিমালিস্ট স্যালিসিলিক অ্যাসিড ফেসওয়াশ নামের এই প্রোডাক্টটি আপনার ত্বকের ভবিষ্যৎ ব্রেকআউট প্রতিরোধ করে

  • সিলিকন-মুক্ত, সালফেট-মুক্ত, প্যারাবেন-মুক্ত ফেসওয়াশ হিসাবে এর কোনো সাইড এফেক্ট নেই

  • তৈলাক্ত ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করতে এটি ব্যবহার করা যাবে আরামসে

  • পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ই এই ফেসওয়াশটি নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারবে 


বায়োডার্মা সেবিয়াম পিউরিফাইং ফোমিং জেল ফেসওয়াশ

২০০ মিলিগ্রামের এই বায়োডার্মা সেবিয়াম পিউরিফাইং ফোমিং জেল ফেসওয়াশটি মূলত কাজ করে যেকোনো ক্যাটাগরির ত্বকের পিম্পল এবং ডার্ক স্পট দূর করার কাজে। 


এই ফোমিং জেলটি বিশেষভাবে ব্রণ বেশি হয় এমন ওয়েলি স্কিনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এতে থাকা ডিপ ক্লিনজিং অ্যাকশনসহ যেসব সুবিধা আপনাকে ফেসওয়াশটির ফ্যান হতে বাধ্য করবে সেসব সুবিধাগুলি হলো: 


  • এটি ত্বকের গভীর থেকে অতিরিক্ত তেল এবং ময়লা অপসারণ করে থাকে

  • ত্বককে সিবাম এবং ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে যথাসম্ভব রক্ষা করে 

  • এটির ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারীর অতিরিক্ত তৈলাক্ততা এবং চকচকে নিয়ন্ত্রিত হয়

  • ত্বকে নতুন দাগ গঠন প্রতিরোধে যথাসম্ভব সাহায্য করে এই বিশেষ ফেসওয়াশটি

  • ত্বকের টেক্সচারকে বিশুদ্ধ করতে এই ফেসওয়াশের জুড়ি মেলা ভার

  • সর্বোপরি এই ফেসওয়াশটি ব্যাক্তির পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকর চেহারা নিশ্চিত করে 


ব্রণের জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহারের পূর্বে জেনে রাখুন

ব্রণ এবং কালো দাগের জন্য ফেসওয়াশ নির্বাচন করার সময় আপনাকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে। আপনার স্কিন কন্ডিশন কেমন, এলার্জি আছে কিনা, স্কিন রিলেটেড কোনো রোগ আছে কিনা সবকিছু জেনে বুঝে ফেসওয়াশ কিনতে হবে। 


তাছাড়া আমরা ফেসওয়াশ কেনার সময় সবচেয়ে বড়ধরণের ভুল যেটি করি সেটি হলো ফেসওয়াশের প্যাকে থাকা তথ্য না পড়েই প্রোডাক্ট কিনে ফেলা। যা কোনোভাবেই করা যাবে না। 


চলুন এক নজরে দেখে নিই ব্রণের জন্য ফেসওয়াশ ব্যবহারের পূর্বে আপনাকে যেসব ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে: 


স্কিনের ধরণ

আপনার ত্বকের ধরন বিবেচনা না করে কখনোই ব্রণের জন্য ফেসওয়াশ নির্ধারণ করবেন না। এক্ষেত্রে ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো তা রিসার্চ করার পূর্বে বুঝে নিন আপনার স্কিন অয়েলি নাকি ড্রাই। অথবা স্কিন ন্যাচারাল কিনা! 


যাদের ফেইস অনেক বেশি অয়েলি তারা সবসময় তেল-মুক্ত বা জেল-ভিত্তিক ক্লিনজার, ফেসওয়াশ ব্যবহারের চেষ্টা করুন। কারণ এই ধরণের ফেসওয়াশ আপনার ত্বককে শুকিয়ে না ফেলে কার্যকরভাবে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করতে সাহায্য করবে। 


আর যাদের শুষ্ক বা সংবেদনশীল স্কিন রয়েছে তারা হালকা হালকা এবং হাইড্রেটিং টাইপের ফেসওয়াশ বেছে নিতে পারেন। 


ফেসওয়াশে থাকা উপাদান

ব্রণ দূর করার জন্য আপনি যেসব বা যেই ফেসওয়াশটি কিনতে চাচ্ছেন সেটিতে অবশ্যই ব্রণ এবং কালো দাগ পরিষ্কার করার মতো সক্ষমতা আছে এমন উপাদান থাকতে হবে। 


মূলত গবেষণা অনুযায়ী স্কিনের ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে স্যালিসিলিক অ্যাসিড, বেনজয়াইল পারক্সাইড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, নিয়াসিনামাইড এবং ভিটামিন সিএর মতো বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 


যা স্কিন থেকে ব্রণ, কালো দাগ, ছিদ্র, ব্যাকটেরিয়া, ময়লা দূর করে৷ আর কোন ফেসওয়াশে কি কি উপাদান আছে তা জানতে হলে ফেসওয়াশ প্যাকের লেয়ার চেক করতে হবে। 


যেটিতে উল্লেখিত উপাদানের পরিমাণ বেশি থাকবে কেনার ক্ষেত্রে ঠিক সেই ফেসওয়াশটিকেই বেছে নিতে হবে। এতে করে দ্রুত পরিষ্কার স্কিন পাওয়া সম্ভব হবে।  


মিডিয়াম ফর্মূলা

ফেসওয়াশের ফর্মূলার ক্ষেত্রে সাধারণত মাথায় রাখতে হবে ফেসওয়াশে থাকা পারফিউম, জ্বালা-পোড়ার ধরণ, টেক্সচার ইত্যাদি। 


যেসব ফেসওয়াশে অতিরিক্ত পরিমাণে সালফেট, সুগন্ধি এবং অ্যালকোহলের মতো উপাদান থাকবে সেসব ফেসওয়াশ ব্যবহার করা থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। 


কারণ এসব উপাদান বাড়তি পরিমাণে থাকা ফেসওয়াশ ত্বককে ছিঁড়ে ফেলতে পারে, পুড়িয়ে ফেলতে পারে এবং উজ্জ্বলতা কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে। 


পর্যাপ্ত কার্যকারিতা

আসলে "ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো" সে-সম্পর্কে আপনি কেনো জানতে চাইছেন? কেনো এই ধরণের ফেসওয়াশ কিনে ব্যবহার করতে চাইছেন? নিশ্চয় ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করে সুস্থ স্কিন নিশ্চিত করার জন্য? 


এক্ষেত্রে যদি ফেসওয়াশ ব্যবহারে কোনো সুবিধাই না পান, সেক্ষেত্রে এর পেছনে অর্থ এবং সময় নষ্ট করাটা কি আদৌ যৌক্তিক? 


এই যৌক্তিকতার বিচারে বুদ্ধিমানের পরিচয় দিতে হলে ফেসওয়াশ কেনার আগে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। আপনি যে ব্রণ দূর করতে চাচ্ছেন, দাগমুক্ত ফেইস চাচ্ছেন তা ফেসওয়াশটি ব্যবহার করলে নিশ্চিত হবে কিনা সেটি জেনে নিতে হবে। 


এক্ষেত্রে ফেসওয়াশের লেবেল চেক করে নিতে পারেন। সেখানে ফেসওয়াশের কার্যকারিতা হিসাবে বেশকিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট পেয়ে যাবেন। 


ইতি কথা 

আশা করি ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো সে উত্তর পেয়ে গেছেন। সুতরাং আর দেরি না করে এফেক্টেড স্কিনের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে আপনার বাজেট এবং পণ্যের প্রাপ্যতা বিবেচনা করে পছন্দের ফেসওয়াশটি কিনে নিন। 


তাছাড়া মনে রাখবেন স্কিনের ব্রণ এবং কালো দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করতে শুধুমাত্র মুখ ধোয়াই কিন্তু যথেষ্ট নয়। ভালো রেজাল্টের জন্য ফেসওয়াশের পাশাপাশি ভালো সিরাম, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিনের মতো অন্যান্য প্রোডাক্টও ব্যবহার করতে হবে৷ 

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন