তৈরী পোশাকশিল্পে রপ্তানি আয় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আসছে

তৈরী পোশাকশিল্পে রপ্তানি আয় প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আসছে

দেশে তৈরী পোশাকশিল্প খাতে রপ্তানি আয়ে বড়ো ধরনের প্রবৃদ্ধি, যা প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ধরে রাখার অন্যতম খাত হলো পোশাকশিল্প। পোকাশ খাতে রপ্তানি আয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০.২৭ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের ৮৪.৫৭ ভাগই এসেছে পোশাকশিল্প থেকে।


এক বছরের ব্যবধানে প্রকৃত রপ্তানির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ শতাংশ। গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে প্রান্তিক এ খাতে প্রকৃতি রপ্তানির পরিমাণ ছিল মোট রপ্তানির প্রায় ৭১ শতাংশ। গত বছর যা ছিল মোট রপ্তানির সাড়ে ৫১ শতাংশ। হিসাব করে দেখা যায় রপ্তানি বেড়েছে ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষক এই তথ্য জানিয়েছেন।


যদিও পোশাকখাতের প্রকৃত আয়ের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছরের শেষ দিকে অধিকাংশ কারখানা ২০-৩০ শতাংশ কম উৎপাদন সক্ষমতায় চলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে উৎপাদন ও কম-বেশি ব্যাহত হয়েছে। এই বিষয় বিবেচনা করলে পোশাক খাতের আয়ের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন উঠে।


অনেকে প্রকৃত রপ্তানি আয়কে পোশাক খাতের মূল্য সংযোজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। অর্থনীতিবিদরা এটিকে মূল্য সংযোজন হিসাবে মানতে রাজি নয়। তাদের মতে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের রপ্তানি আয় থেকে আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃতি যে আয় পাওয়া যায়, সেটিকে প্রকৃত মূল্য সংযোজন বলা যাবে না।


বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত জুলাই-সেপ্টম্বরে পোশাক রপ্তানি বাবদ মোট আয় ছিল ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৩৯ কোটি ডলার। এ খাতে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৮২২ কোটি ডলারে, যা এ খাতের মোট আয়ের ৭১ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ২৭ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানি বাবদ ব্যয় ছিল ৪৯৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃতি রপ্তানি আয় ছিল ৫২৯ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের সাড়ে ৫১ শতাংশ।


বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার মোয়াজ্জেম বলেন, পোশাক খাতের রপ্তানির বিপরীতে আমদানি যে তথ্য, তাতে আমদানি খরচ অনেক কমেছে। তবে, প্রথমত পণ্যের চাহিদা কম থাকায় আমদানিও কমতে পারে। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববাজারে পোশাকের কাঁচামালের দাম কিছুটা কমেছে, তাই এ বাবদ খরচ কমে গেছে। তৃতীয় কারণ হতে পারে, ডলার-সংকটের কারণে আমদানি কম হয়েছে।


পোশাক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ওভেন পোশাকের চেয়ে নিট পোশাকের পোশাককে মূল্য সংযোজনের পরিমাণ বেশি। ওভেন পোশাক রপ্তানি করে যে আয় হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানির পিছনে ব্যয় হয়ে যায়। নিট পোশাকের ক্ষেত্রে রপ্তানি আয়ের ১৫ শতাংশের মতো খরচ হয় কাঁচামাল আমদানিতে। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর ধরে ওভেনের তুলনায় নিট পোশাক রপ্তানিতে ভালো করেছে বাংলাদেশ।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন