স্মার্টফোনে আসক্তি জাতির ভবিষ্যত

স্মার্টফোন, আসক্ত, ভবিষ্যত

প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান বিশ্বে নিত্যদিনের ব্যবহৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইসের মধ্যে অন্যতম হলো মোবাইল ফোন। এই যন্ত্রের গুরুত্ব যেমন অনেক বেশি, তেমন ক্ষতির দিকটাও অনেক। মোবাইল ফোনের অপব্যবহারে দিনদিন ধ্বংস হচ্ছে আমাদের তরুণ সমাজ। এই ভয়াবহতা শুরু হয়েছে স্মার্টফোন ব্যবহারের পর থেকে। শুধু তরুণ সমাজ নয়,এই স্মার্টফোনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু কিশোরা। স্মার্টফোন ব্যবহার ফলে বর্তমান বিশ্বের শিশুরা মানসিক রুগী হয়ে যাচ্ছে।


একে অপরের সাথে একটানা অনেকক্ষণ কথা বলা, গেমস খেলা, গান শোনা, মুভি দেখা, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে ব্যস্ত থাকার জন্য সৃষ্ট হয় মানসিক চাপ। মোবাইল ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে দৃষ্টিশক্তির অক্ষমতা। অনেক সময় ধরে মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার জন্য দৃষ্টিশক্তির কার্যক্ষমতা কমে আসে। ফলে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়,আর চিন্তা শক্তি কমে যায়।


অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হচ্ছে। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, স্মার্টফোন ব্যবহার করার জন্য শারীরিক মানসিক চাপ, হতাশা, খিটখিটে মেজাজ, ঘুম না আসে এবং স্কুলে রেজাল্টের উপর খারাপ প্রভাব পড়ছে। বর্তমান সমাজের ছেলে মেয়েদের এমন অবস্থা হচ্ছে যে, তাদের স্মার্টফোন থাকতেই হবে। ফোনে আসক্তি ছেলে মেয়েরা বন্ধুসুলভ আচরণ কি সেটা ও ঠিক মতো জানে না।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দীর্ঘ সময় ফোনে কথা বললে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অনেকক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বললে মাথাব্যাথা, ঘুম না আসা, এমনকি সহজ বিষয় ও ভুলে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। বিশ্বে মোবাইল ৮০ শতাংশই মানুষই মোবাইলে আসক্ত। শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি। মোবাইল আসক্তির ফলে শিশুদের পড়ালেখায় অমনোযোগী, জেদী ও আক্রমণাত্মক স্বাভাব করে দিচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।


বিশ্বব্যাপী মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪১.৫ ভাগ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতির ফলে স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে হুমকির মুখে দাড়িয়েছে এশিয়ার দেশগুলোও। বর্তমান দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬৩.৩ শতাংশ মানুষ।


আজকাল, রাতে ঘুমানোর আগে আমরা মোবাইল স্ক্রিনে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকি, গেম খেলি, ভিডিও দেখি বা চ্যাটিং করি। এই সবের ফলে আমাদের রাতে ঘুম নষ্ট হচ্ছে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে আমাদের ব্রেইন ঠিক মতো বিশ্রাম নিতে পারছে না। 


এমন ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক থাকা সত্ত্বেও দেশের বেশির ভাগ মোবাইল টাওয়ার হচ্ছে বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে। এই সবদিকে নজর দেওয়ার মতো কেউ নেই। এই ভাবে চলতে থাকার ফলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে একটা বিকলাঙ্গ জাতি।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন