বাব-ছেলের হত্যায় জড়িত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ৩০ বছর পর গ্রেপ্তার

বাব-ছেলের হত্যায় জড়িত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ৩০ বছর পর গ্রেপ্তার


৩০ বছর আগে ১৯৯৩ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের আরিফ নামে এক ব্যক্তি বাবা-ছেলেকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিচারের রায়ে খুনীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। রায়ে আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হলেও আসামী পলাতক ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯/১১/২০২৩) আরিফ নামের ঐ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০।


র‍্যাবের সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান কেরানীগঞ্জে বাব-ছেলের কুপিয়ে হত্যার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার সময় র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হয়।


১৯৯৩ সালের ১৩ই জুলাই চাঁদাবাজি করতে গিয়ে চায়ের দোকানদার শরিফুল ও তাঁর ৯ বছরের ছেলে খোকনকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা করার পর খুনী নাম পরিচয় পরিবর্তন করে ফেলে। পরিচয় গোপন করার পরও ৩০ বছর পর ৫২ বছরের আরিফ নামের ঐ ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়। ঐ দিন শরিফুলের ১২ বছরের ছেলেকে ও জখম করা হয়। এই হত্যার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিল পাঁচ জন। পাঁচ জনের মধ্যে আরিফ একজন। আজ সংবাদ সম্মেলনে র র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যমের শাখার পরিচালক এই তথ্য জানান।


র‍্যাব আরো বলেন, খুনের পর আরিফ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচয় গোপন করে ছিল। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এসে পরিচয় গোপন করে নাম রাখে শরিফুল ইসলাম। শরিফুল নামে একটি ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরী করে প্রথমে ঢেউটিন পরে মুদি ও লন্ড্রি ব্যাবসা শুরু করেছিল। র‍্যাব সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে।


বাবা-ছেলের খুনের তদন্ত ও বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করা হয়। ১৯৯৪ সালের ২৬ অগাস্ট পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়। ১০ বছর পর ২০০৪ সালের ২১ জুলাই আরিফসহ পাঁচজনকে আদালত মৃত্যুদন্ড দয়।২০০৮ সালে হাইকোর্ট পুনরায় বিচারের জন্য মামলাটি নিম্ন আদালতে পাঠান। রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনে সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এই আদেশ বহাল রাখেন বিচারক।


২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আরিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার দিন আদালতে তিনজন আসামি উপস্থিত ছিল। উপস্থিত আসামী মধ্যে তিনজন হলো শরিফুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম নজু ও মো মাসুদ। এর মধ্যে শরিফুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম কারাগারে আছে। বিচার চলাকালে মারা গেছে মিস্টার। এখনো পলাতক আছে মাসুদ। আরিফ ও মাসুদ পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গতকাল আসামি আরিফ গ্রেপ্তার হলেও মাসুদ এখনো পলাতক আছে।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন