ভাইরাল! ৪৪ ইঞ্চি বর ৩৭ ইঞ্চি কনে

ভাইরাল! ৪৪ ইঞ্চি বর ৩৭ ইঞ্চি কনে


দেখতে ছোটো আকৃতির হলে-ও পড়াশোনায় বেশদক্ষ আব্বাস আলি। অদম্য মেধায় একএক করে পার করেছেন পড়াশোনার অনেকগুলো ধাপ। সমাজের নিয়ম মেনে অন্যদের মতোই দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চান তিনি। শুরু হয় পাত্রী খোজার কাজ কিন্তু আব্বাস দেখতে খর্বাকৃতির হওয়ায়, কনে খুজতে কিছুটা বিপাকে পরেন পরিবার।


তবে কিছুদিনের মধ্যেই আব্বাসের পরিবার তার মতোই দেখতে খর্বাকৃতির কনে খুজে পায়, যার নাম সোনিয়া। কনে সোনিয়ার উচ্চতা ছিলো ৩৭ ইঞ্চি, আর বর আব্বাসের উচ্চতা ৪৪ ইঞ্চি। দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪৪ ইঞ্চির আব্বাস এবং ৩৭ ইঞ্চির সোনিয়ার বিয়ের আয়োজন করা হয়। সামর্থ্যের মধ্যে এলাকার সবাইকে দাওয়াত দিয়ে ধুমধামে বিয়ে সম্পূর্ণ করেন আব্বাস আলি। আব্বাস সোনিয়ার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয় ৩ নভেম্বর ২০২৩ রোজ শুক্রবার।


আব্বাসের বিয়েকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী সাপ্তাহ জুড়ে আনন্দ-ফুর্তি করেন। শুক্রবার বিয়ে সম্পূর্ণ করে সোনিয়া'কে ঘরে তোলেন আব্বাস। পরেরদিন শনিবার বউ'ভাতের আয়োজন করেন, অনুষ্ঠানে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসি এসএম আশরাফুল আলোম সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। অসি আশরাফুল আলোম বলেন, আমি আব্বাস আলির কলেজে গেছিলাম সেখান থেকেই আমাদের পরিচয়। আর সেই পরিচয় থেকেই আব্বাস আমাকে থানায় এসে তার বিয়ের দাওয়াত দিয়ে যান। আমি অনুপ্রাণিত হয়ে আমার ব্যক্তি Facebook এ আব্বাস এর বিয়ের ছবি প্রকাশ করি। যা নিমিষেই ভাইরাল হয় এবং সমাজের বিভিন্ন স্থানে উদ্দীপনা তৈরি করে।


এছাড়াও আমার পোস্টের মাধ্যমে আব্বাস উপমন্ত্রীর নজরে আসেন এবং তিনি নিজেও আব্বাসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এবং তিনি আরো নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি যেনো তার বিয়েতে প্রত্যক্ষভাবে থেকে তাকে সাহায্য করি। পুলিশ অফিসার আরো বলেন, আমি আব্বাসের গায়ে হলুদের দিনেও এখানে এসেছিলাম। সেদিন আব্বাস অনেক নাচ গান করেছে, অনেক আনন্দ মজা করেছে যা অনলাইনে রিতীমত ভাইরাল। তাছাড়া বিভিন্ন নিউজ মিডিয়াতেও আব্বাসকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে সেগুলিও বর্তমান ভাইরাল।


আমি নিজেও আনন্দিত আব্বাস সোনিয়ার বিয়েতে অংশ নিয়ে। আমি আব্বাসের জন্য দোয়া করি এবং পাশাপাশি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী। আপনারা সবাই তাদের জন্য শুভ কমনা করবে এটাই আমার আশা। আব্বাসের বাবা দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আমার ছেলে খর্বাকৃতির হলেও সে অনেক শিক্ষিত। সরকার যেনো আমার ছেলেকে ডিগ্রী পাশের পর ভালো একটা চাকরি দেই। তাছাড়া এলাকার এমপি সদস্য হারুন নাহার আব্বাসের বিষয়টি দেখবেন বলে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসী সকলের একটাই বাদি তাকে যেনো সরকার একটি চাকরি ব্যবস্থা করে দেন।


আব্বাস কষ্ট করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে সে আমাদের বাগের হাটের অতন্ত গর্বিত এক সন্তান। যাইহোক, আব্বাস এর মতো এমন হাজারো শিক্ষিত যুবক রয়েছে, এমন আরো অনেক ৪৪ ইঞ্চির আব্বাস হয়তো অসহায় হয়েই দিন পার করছে। আমাদের না'দেখার বাহিরে এমন আরো অনেক খর্বাকৃতির আব্বাস রয়েছে। যারা হয়তোবা ভাইরাল হয়নি বা কারো নজরে আসেনি। এমন সকল খর্বাকৃতির মানুষগুলি যেন দেশের সরকারের নজরে আসে এবং সেজন্য আমাদের উচিত তাদেরকে আরো বেশি সামনে আনা এবং আরো বেশি ভাইরাল করা। যাতে করে তারা খুব তাড়াতাড়ি সরকারের নজনে আসতে পারে এবং সরকার যেনো তাদেরকে একটি ভালো চাকরি উপহার দিতে পারে।

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন