ভারাইল রাজমিস্ত্রী কোটিপতি ! মাসে আয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।

Freelancing viral news
image: ভারাইল রাজমিস্ত্রীর মাসে আয় আড়াই লাখ টাকা 

রাজমিস্ত্রী থেকে হটাৎ কুটিপাটি বনে যাওয়ায় সাদ্দাম এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। তবে হটাৎ ভাইরাল হওয়া সহজ হলেও কোটিপতি বনে যাওয়ার গল্পটা ছিলো বেশ কঠিন। জীবনের অনেকটা পথ স্ট্রাগল করে, নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি সফলতার দাড় প্রান্তে দাড়িয়েছেন।


ভাইরাল সাদ্দামের জন্মস্থান নড়াইলে হলেও জীবন বাচার তাগিদে তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়েছে। দরিদ্র্য পরিবার হওয়ায় জীবনে পড়ালেখার করার সুযোগ হয়ে উঠেনি। পড়ালেখার বয়সটাতেই তাকে পরিবারের দ্বায়িত্ব নিতে হয়েছে। পরিবারের দ্বায়িত্ব নিতে সাদ্দাম পেশা হিসেবে রাজমিস্ত্রীর কাজ বেছে নেন। প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর একাধারে রাজমিস্ত্রীর কাজ চালিয়ে যান। রাজমিস্ত্রীর কাজে তার দৈনিক মজুরি ছিলো মাত্র ৩৫০ টাকা।


বাজারের উর্ধগতির সাথে সাথে পরিবারের সংখ্যাও একেএকে বাড়তে থাকে। তখন সল্প আয়ে দিয়ে পরিবার চালানো সাদ্দামের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে উঠে। এমন্ত অবস্থায় তিনি রাজমিস্ত্রীর পাশাপাশি অন্যান্য কাজের সন্ধান করতে থাকে। কাজ খুজতে খুজতে হঠাৎ করে ফ্রিল্যান্সিং এর বিষয়ে জানতে পারেন। পড়াশোনা তেমন না থাকলেও নিজের অদম্য ইচ্ছায় কোচিং সেন্টারে ওয়েব ডেভেলপার কোর্সে ভর্তি হন তিনি। তারপর টানা ৬ মাস রাজমিস্ত্রীর পাশাপাশি ওয়েব ডেভেলপারের কাজ শিখেন সাদ্দাম।


প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর কঠোর পরিশ্রম করার পর মিলে কাজের সন্ধান। তিনি কাজ না-পাওয়ার কারণে কখনো হতাশ হননি। সবসময় মনবল শক্ত রেখে নিজের লক্ষ্যে অটুট থেকেছেন। কাজ না-পাওয়া অবদি রাজমিস্ত্রীর কাজ চালিয়ে সংসার চালিয়েছেন। এখন তিনি একজন সফল ওয়েব ডেভেলপার। গত ৪বছরে সাদ্দাম আপওয়ার্ক,ফ্রিলান্সার,ফাইবার সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা আয় করেছেন। যা জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ২৪ এর সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে। 


সাদ্দামের দেয়া সাক্ষাৎকার বর্তমান নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। দেশের মানুষ সাদ্দামের এমন কঠোর পরিশ্রমের কথা জেনে বেশ আনন্দিত। সাদ্দামের অনুপ্রেরণায় হাজারো যুবক নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। এখন অনলাইনে তাকে নিয়ে হচ্ছে চর্চা, একাধারে সবাই তাকে অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত। ভাইরাল সাদ্দাম ইউটিউব কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে বর্তমান ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন।


এছাড়াও তার একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট আছে যেখানে তিনি বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় করে থাকেন। সেখান থেকে তিনি বর্তমানে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। ফেসবুক কন্টেন্ট থেকেও ভালো পরিমাণ আয় করেন তিনি। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করেন। এখন সাদ্দামের জমানো অর্থ প্রায় ৩ কোটি টাকা। যার সবটুকু তিনি অনলাইন থেকে আয় করে জমিয়েছেন বলে জানা যায়।


এছাড়া তিনি বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনেছে, নিজের পরিবারের জন্য বাড়ি করেছেন। যা অনলাইনে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। সাদ্দামের মতো এমন আরো অনেক যুবক রয়েছে যারা হয়তো ভাইরাল হয়নি তবে জীবনে সফল হয়েছেন। তাদের গল্প আমাদের জানা নেই তবে তাদের জন্য রইলো শুভকামনা। ভালো থাকুক সাদ্দাম, ভালো থাকুক দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো। 


সাদ্দামের মতো করে আমরাও যদি আমাদের স্বপ্নগুলিকে পুরন করতে চাই, জীবনে সফলতা আনতে চাই তবে আমাদের উচিত স্বপ্নকে আগলে ধরে কঠোর পরিশ্রম করা। মনে শক্তি রেখে স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাও, মনেরেখো সফলতা কেবলি সময়ের ব্যপার মাত্র। উদাহরণ চোখের সামনে ভারাইল রাজমিস্ত্রী কোটিপতি !


0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন