ওজন বাড়ানোর সেরা উপায়
ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি কিছু ব্যক্তির জন্য চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া হতে পারে, এটি ঠিক তাদের জন্য বিশেষ করে যাদের দ্রুত বিপাক বা স্বাভাবিকভাবেই পাতলা দেহের গঠন রয়েছে। যদিও অনেক লোক রয়েছে ঠিক তাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোক ই ওজন কমানোর দিকে মনোনিবেশ করে, তবে যাইহোক একজন ব্যক্তির জন্য ওজন বাড়ানো বিশাল একটি সংগ্রাম হতে পারে। তবে সঠিক পদ্ধতি এবং সঠিক নিয়ম মেনে ওজন বাড়ানো সম্ভব। এখানে মোটা হওয়ার কিছু সহজ উপায় রয়েছে:
মোটা হওয়ার সেরা ৫টি উপায়
১. ক্যালরির পরিমাণ বাড়ান
মোটা হওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সবার আগে জানা দরকার তা হল, শক্তি তথা ক্যালরির পরিমাণ। উদাহরণ সরুপ, আপনি দৈনিক কাজের মাধ্যমে যে ক্যালরি বা শক্তি অপচয় করেন, তার চেয়ে অধিক বেশি ক্যালরি যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। ওজন বাড়াতে তথা মোটা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরির পরিমাণ ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় তবে, সাধারণ ভাবে যদি কেউ প্রতিদিন নির্ধারিত ক্যালোরির চেয়ে অতিরিক্ত 500-1000 ক্যালোরি গ্রহণ করে তবে, প্রতি সপ্তাহে 1-2 পাউন্ড ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
যে খাবারগুলিতে অতিরিক্ত ক্যালোরির পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হল: মাংস, ডিম, মাখন, বাদাম, কিংবা চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য। এই খাবারগুলি অল্প পরিমাণে আহার করার মাধ্যমে অন্যসব আলাদা খাবার থেকে অধিক বেশি ক্যালোরি পাওয়া যায়। যদি অল্প সময়ের মধ্যে ওজন বাড়াতে চান তবে, আপনার ডায়েটে এমন খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন, যা আপনাকে মোটা হতে সহায়তা করবে।
২. ওজন বাড়াতে ঘন ঘন খাবার খান
মোটা হওয়ার জন্য বা ওজন বাড়াতে হলে একবারে না খেয়ে ঘন ঘন খাওয়ার খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন, এতে খাবারের প্রতি রুচি ভালো থাকে। পেট ভর্তি করে খাবার খেলে রুচির ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তখন ওজন বাড়ার পরিরর্তে রোগা-সোগা হতে পারেন। খাবারের প্রতি রুচি ভালো রাখতে হলে অল্প পরিমাণে দিনে কয়েকবার খাওয়া অভ্যেস গড়ুন। প্রতি 2-3 ঘন্টা অন্তর তিনটি প্রধান খাবার এবং তিন থেকে চারটি স্ন্যাকস খাওয়ার চেষ্টা করুন। স্ন্যাকসের মধ্যে প্রোটিন বার খাবার গুলো যেমন ট্রেইল মিক্স, ফলের স্মুদি ইত্যাদি এমন উচ্চ-ক্যালোরি সম্পুর্ন খাবার গুলো আপনার খাবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন যা ক্যালোরির পরিমাণ বাড়াবে এবং মোটা ও ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
৩. ওজন বাড়াতে ব্যায়াম অনুশীলন করুন
শক্তির প্রশিক্ষণ তথা ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশীর উপর ভর তৈরি করতে সাহায্য করে, যা শরীরের ওজন বাড়াতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। আপনার ওয়ার্কআউট রুটিনে স্কোয়াট ব্যায়াম এর পাশাপাশি অন্য সব আলাদা ব্যায়াম গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন যেমন, ডেডলিফ্ট ব্যায়াম, বেঞ্চ প্রেস সহ শক্তি শক্তিবর্ধক ব্যায়াম গুলি প্রতিদিন অনুশীলন করতে পারেন, যা ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। পেশী বৃদ্ধির জন্য ভারী ওজন উঠানামা করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে তাতে ওজন বাড়াতে পারেন। এভাবে রোজ অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনি মোটা এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারেন।
৪. ওজন বৃদ্ধিতে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা
সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যথেষ্ট ঘুম ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ঘুমের অভাবে শরীরে লেপটিন হরমোনের মাত্রা কমে যেতে পারে, যা ক্ষুধা বৃদ্ধি এবং বিপাক তন্ত্রে বাধা তৈরি করতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি এবং মোটা হওয়ার জন্য প্রতি রাতে 7-9 ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যেস করুন।
৫. কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম সীমিত করুন
কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম শরীরের উল্লেখযোগ্য ক্যালোরির পরিমাণ ক্ষয় করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে, যা শরীরের ওজন বাড়াতে বেশ পারদর্শী। কারন কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যায়াম। আপনার লক্ষ্য যেহেতু ওজন বাড়ানো কিংবা মোটা হওয়া তাই নির্দিষ্ট লক্ষ পূর্ণ হলে, কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের পরিমাণ সীমিত করুন। মোটা হওয়ার লক্ষ্য পূর্ণ হলে শক্তি প্রশিক্ষণ তথা কম ক্যালোরির খরচ হয় এমন ব্যায়ামের দিকে মনোযোগ দিন। যেমন হাঁটা বা সাইকেল চালানোর উপর ফোকাস করুন।
মোটা হওয়ার সহজ উপায়
পরিশেষে, শরীরের ওজন বাড়ানো এবং মোটা হওয়া সত্যি একটি চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া, তবে সঠিক পদ্ধতি অনুশীলন এর মাধ্যমে তা অর্জনযোগ্য হতে পারে। ক্যালরির পরিমাণ বৃদ্ধি করে, ঘন ঘন খাবার খাওয়া, শক্তি প্রশিক্ষণ ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা, পর্যাপ্ত ঘুমা এবং কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম সীমিত করে যেকেউ স্বাস্থ্যকর ওজন বাড়াতে এবং মোটা হতে পারে। যাইহোক, সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য সুষম খাদ্যের পাশাপাশি ব্যায়ামের রুটিনকে বিশেষ ভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
0 মন্তব্যসমূহ